ডাউন’স সিনড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিনড্রোম ও পাটাউ’স সিনড্রোম: 1লা জুন 2021 তারিখে বা এর পূর্বে করা কম্বাইন্ড বা কোড্রিপল টেস্ট
হালনাগাদ করা হয়েছে 19 এপ্রিল 2021
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (PHE) এই তথ্যটি এনএইচএস-এর পক্ষ থেকে তৈরি করেছে। এই তথ্যাবলীতে ‘আমরা’ শব্দটির মাধ্যমে স্ক্রিনিং প্রদানকারী এনএইচএস পরিষেবাকে বোঝানো হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত এই অ্যানিমেশনটির মাধ্যমে গর্ভবতী থাকাকালীন ডাউন’স সিনড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিনড্রোম ও পাটাউ’স সিনড্রোম এর স্ক্রিনিং এর বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ডাউন’স সিনড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিনড্রোম ও পাটাউ’স সিনড্রোম ভিডিও
1. স্ক্রিনিং করানোর উদ্দেশ্য
আপনার বাচ্চার ডাউন’স সিন্ড্রোম (এটি ট্রিসমি 21 বা টি21 নামে পরিচিত), এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম (ট্রিসমি 18 বা টি18)বা পাটাউ’স সিন্ড্রোম (ট্রিসমি 13 বা টি13) থাকার সম্ভাবনা কতটুকু সেটি জানার জন্য এই স্ক্রিনিং টেস্টটি করা হয়।
স্ক্রিনিংটি করা না করা সম্পূর্ণভাবে আপনার পছন্দ আপনাকে স্ক্রিনিং টেস্টটি করতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। অনেক লোকজন জানতে চান যে তাদের সন্তানের মধ্যে কোনো সমস্যাটি আছে কিনা আবার কিছু লোকজন সেটি জানতে চান না। স্ক্রিনিং নিখুঁত নয় এবং এটি হয়ত একটি ভুল ফলাফল দিতে পারে। এর ফলে আপনার প্রেগন্যান্সি অব্যাহত রাখা না রাখার বিষয়টি আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করতে পারে।
আপনি যে জন্য স্ক্রিনিং করাতে চান তাহলে আপনি স্ক্রিনিং করাতে পারেন:
- সকল 3টি রোগ
- কেবল ডাউন’স সিন্ড্রোম
- কেবল এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম ও পাটাউ’স সিন্ড্রোম
আপনি যদি একটি বা যমজ বাচ্চা গর্ভে ধারণ করেন তাহলে আপনাকে এই টেস্টটি করার আহ্বান জানানো হবে।
2. স্ক্রিনিং এর সার্বিক দিক
স্ক্রিনিং প্রক্রিয়াটির সাথে একাধিক পরীক্ষার দরকার হতে পারে।
প্রথম স্ক্রিনিং টেস্টটিকে বলা হয় কম্বাইন্ড টেস্ট (বা এটিকে কোড্রিপল টেস্টও বলা হয় যদি আপনি গর্ভাবস্থার শেষের দিকে থাকেন)। এর পর আপনাকে হয়ত ভিন্ন ধরণের একটি টেস্ট করানোর আহ্বান জানানো হতে পারে যেটিকে এনআইপিটি (নন-ইনভেসিভ প্রিন্যাটাল টেস্টিং) বলা হয়। এসব স্ক্রিনিং টেস্টের যে কোনো একটি করানোর পর আপনাকে একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করানোর আহ্বান জানানো হতে পারে এটি জানার জন্য যে আপনার বাচ্চার মধ্যে নিম্নোক্ত কোনো সমস্যা আছে কিনা।
[ডাউন’স’স সিনড্রোম] এর ব্যাপারে আরও তথ্য জানুন(https://www.nhs.uk/conditions/downs-syndrome/), এডওয়ার্ড’স সিনড্রোম পাটাউ’স সিন্ড্রোম এনএইচএস ওয়েবসাইটে।
3. এই রোগগুলো সম্পর্কে
আমাদের শরীরের কোষের ভিতরে এক ধরণের ক্ষুদ্র অবকাঠামো থাকে যাদের ক্রোমোজোম বলা হয়। এগুলো ডিএনএ (জেনেটিক উপাদান) দিয়ে তৈরি। এগুলো জিন বহন করে যেটি আমরা কীভাবে বেড়ে উঠবো তা নির্ধারণ করে। প্রতিটি কোষে 23 জোড়া জিন থাকে। যখন শুক্রাণু বা ডিম্বাণু কোষে তৈরি হয় তখন থেকে সমস্যা শুরু হতে পারে যার ফলে একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোম নিয়ে একটি শিশুর জন্ম হতে পারে।
যেকোনো বয়সের মায়ের শিশুর ডাউন’স সিন্ড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম এবং পাটাউ’স সিন্ড্রোম হতে পারে কিন্তু মায়ের বয়স বাড়ার সাথে সাথে শিশুর মধ্যে এই সিনড্রোমগুলোর মধ্যে কোন একটির দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
শরীরের কিছু কোষে বা সবগুলোতে ক্রোমোজোমের অতিরিক্ত একটি কপি থাকার দরুন এটি হয়। শুধুমাত্র কিছু কিছু কোষে অতিরিক্ত ক্রোমোজোম থাকাকে মোজাইক ফর্ম বলা হয় এবং এর ফলে শিশুটির অপেক্ষাকৃত মৃদু প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আপনার শিশুটির ডিজেবিলিটির ধরণ ও মাত্রা স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায় না।
ডাউন’স’ সিন্ড্রোম (টি21)
ডাউন’স সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে শরীরের প্রতিটি বা কিছু কোষে ক্রোমোজোম 21-এর একটি অতিরিক্ত প্রতিলিপি থাকে।
ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত একজন ব্যক্তির কিছুটা পরিমাণে লার্নিং ডিজেবিলিটি থাকবে। এর অর্থ হল নতুন কোন কিছু বোঝা ও শেখা তাদের জন্য অধিকাংশদের তুলনায় কঠিন হবে। পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের ক্ষেত্রে তাদের সামনে কিছু যোগাযোগ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়াতে পারে এবং দৈনন্দিন কিছু কাজ কর্ম সামলাতেও অসুবিধা হতে পারে। ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত লোকজনদের চোখ, কান ও মুখের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হয় কিন্তু তাদের সবাই দেখতে একই রকম হয় না।

ডাউন'স সিন্ড্রোম আছে এমন একটি শিশু
ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অধিকাংশ ছেলেমেয়েরাই মূলধারার প্রাইমারি স্কুলে যায় কিন্তু তাদের অধিকতর সাহায্যের প্রয়োজন হবে।
ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত লোকজনদের মধ্যে কিছু কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যা সচরাচর দেখা যায়। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে হৃদপিণ্ডের সমস্যা এবং শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টি সংক্রান্ত সমস্যা। অধিকাংশ স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসা করা যেতে পারে কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত প্রায় 5% শিশুরা তাদের প্রথম জন্মদিনের চেয়ে বেশি বাঁচবে না।
কোন মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা নেই এমন সকল শিশুদের জীবন কাল অধিকাংশ ছেলে-মেয়েদের সমান হবে এবং ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তিরা 60 বছর বা তার চেয়েও বেশি বয়স পর্যন্ত জীবন যাপন করবেন।
ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত লোকজনেরা একটি ভালো মানসম্পন্ন জীবন যাপন করতে পারেন এবং অধিকাংশ লোকেরা বলেন যে তারা খুবই আনন্দে নিজেদের জীবন যাপন করেন। সাহায্য সহযোগিতা প্রাপ্ত হয়ে ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত আরও অধিক সংখ্যক লোকজনেরা চাকরি পেতে পারেন, অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন এবং প্রাপ্তবয়স্ক হলে খানিকটা স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে পারেন।
এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম (টি18)-এবং পাটাউ’স সিন্ড্রোম (টি13)
এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের সব বা কিছু কোষে ক্রোমোজোম 18’এর একটি অতিরিক্ত প্রতিলিপি থাকে। পাটাউ’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের সব বা কিছু কোষে ক্রোমোজোম 13’এর একটি অতিরিক্ত প্রতিলিপি থাকে।
দুঃখজনকভাবে বেঁচে থাকার হার কম এবং যে সকল শিশুরা জীবন্ত জন্মায় তাদের মধ্যে এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত কেবল 13% এবং পাটাউ’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত কেবল 11% তাদের প্রথম জন্মদিনের চেয়ে বেশি লম্বা জীবন যাপন করবে। কিছু কিছু শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে তবে সেটি বিরল।
এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম ও পাটাউ’স সিন্ড্রোম নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের লার্নিং অক্ষমতা থাকবে এবং তাদের নানাবিধ শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হবে, এই সমস্যাগুলো সাধারণত খুবই মারাত্মক হতে পারে। তাদের হৃদপিণ্ড, শ্বাসযন্ত্র, কিডনি এবং পাচক সিস্টেম নিয়ে তাদের সমস্যা হতে পারে।
পাটাউ’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অর্ধেক শিশুদের জন্মগত বিকৃত ঠোঁট এবং তালু থাকবে। এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম ও পাটাউ’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের জন্মের সময় ওজন ও কম হবে।
তাদের সমস্যার সত্ত্বেও, ছেলে-মেয়েরা তাদের বিকাশে ধীরে-ধীরে উন্নতিসাধন করতে পারে। উভয়ের মধ্যে যেকোনো একটি দ্বারা আক্রান্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের একটি বিশেষজ্ঞ স্কুলে যেতে হবে।
প্রতি 10,000 জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্য 10 জন ^ডাউন’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়। প্রতি 10,000 জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্য 3 জন ডাউন’স এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়। প্রতি 10,000 জন্ম নেওয়া শিশুর মধ্যে প্রায় 2 জন পাটাউ’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়।
4. প্রথম স্ক্রিনিং টেস্ট
সমন্বিত টেস্টটি আপনি করতে চাইলে যা যা করতে হবে:
- গর্ভবতী থাকার সময় 10 থেকে 14 সপ্তাহের মধ্যে আপনার বাহু থেকে রক্তের একটি নমুনা সংগ্রহ করা হয়
- গর্ভবতী থাকার 11 থেকে 14 সপ্তাহের মধ্যে আপনার শিশুর ঘাড়ের পেছনের দিকের তরলের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য একটি আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করানো হয় – এটি নুচাল ট্রান্সলুসেন্সি (এনটি) হিসাবে পরিচিত।
আপনার শিশুর মধ্যে সমস্যা থাকার সম্ভাবনা কতটুকু সেটি জানার জন্য আপনার বয়সের সাথে এসব তথ্য সমন্বিত করা হয়।
আপনি যদি ইতিমধ্যে 14 সপ্তাহের বেশী দিন যাবত গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে সমন্বিত টেস্টটি আপনার জন্য উপযুক্ত না। এর পরিবর্তে আপনাকে যেটি করতে বলা হবে:
- ডাউন’স সিন্ড্রোমের স্ক্রিনিং এর জন্য গর্ভধারণের 14 থেকে 20 সপ্তাহের মধ্যে কোয়াড্রুপল নামক একটি রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে (এটি সমন্বিত টেস্টের মত সঠিক হয় না)
- এডওয়ার্ড’স সিনড্রোম ও পাটাউ’স সিনড্রোম আছে কিনা সেটি জানার জন্য 20 সপ্তাহের সময় একটি স্ক্যান করা হয়
5. পরীক্ষার নিরাপত্তা
স্ক্রিনিং টেস্টটি আপনার বা আপনার সন্তানের কোন ক্ষতি করবে না তবে এই টেস্টটি আপনি করবেন কিনা সেই সিদ্ধান্তটি ভেবেচিন্তে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার শিশুটির এসব সমস্যা আছে কিনা টেস্টটির মাধ্যমে সেটি নিশ্চিতভাবে জানা যায় না। আপনার গর্ভধারণের বিষয়টি নিয়ে আপনার পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী হতে পারে টেস্টের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য সে ব্যাপারে আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
প্রথম স্ক্রিনিংটি থেকে যদি উচ্চ মাত্রার আশঙ্কা থাকে তাহলে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি দ্বিতীয় স্ক্রিনিং টেস্ট বা একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করাবেন কিনা যেখানে অকাল গর্ভপাত হওয়ার একটি ঝুঁকি থাকে। আপনার ডায়াগনস্টিক টেস্টটি করা হলে এর ফলাফলের উপর নির্ভর করে আপনাকে হয়ত সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে যে আপনি প্রেগন্যান্সিটি অব্যাহত রাখবেন কিনা বা অকাল গর্ভপাত করাবেন কিনা।
6. পরীক্ষায় সম্ভাব্য ফলাফল
স্ক্রিনিং টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর আপনি যা চাইবেন তার উপর নির্ভর করে আপনাকে একটি বা দুটি ফলাফলই জানাবো:
- ডাউন’স সিন্ড্রোমের একটি ফলাফল
- এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম ও পাটাউ’স সিন্ড্রোমের একটি যৌথ ফলাফল
নিম্ন মাত্রার আশঙ্কা থাকা ফলাফলের মানে হল আপনার শিশুর এই সমস্যাটি হবার সম্ভাবনা কম তবে সম্ভাবনাটিকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অধিকাংশ স্ক্রিনিং টেস্টের ফলাফলে (তাদের প্রায় 97%) নিম্ন মাত্রার আশঙ্কা থাকে।
উচ্চ মাত্রার আশঙ্কা থাকা ফলাফলের মানে হল আপনার শিশুর এই সমস্যাটি হবার সম্ভাবনা বেশী তবে সেটি নিশ্চিত নয়। সার্বিকভাবে প্রায় 3% টেস্টের ফলাফল উচ্চ মাত্রার ঝুঁকির হবে।
আমরা প্রতিটি ফলাফল দিব একটি সম্ভাবনার সাথে তুলনা করে, উদাহরণস্বরূপ আপনার বাচ্চার ডাউন’স সিন্ড্রোম থাকার সম্ভাবনা হল ‘150 এর মধ্যে 1’। দ্বিতীয় সংখ্যাটি যত বেশী (যেমন 150) আপনার শিশুর ক্ষেত্রে সমস্যাটি নিয়ে জন্ম গ্রহণ করার সম্ভাবনা তত কম। সুতরাং ‘200 এর মধ্যে সম্ভাবনা 1’ হল ‘100 এর মধ্যে সম্ভাবনা 1’ এর চেয়ে ছোট।
A ‘কম মাত্রার সম্ভাবনা’ ফলাফলের মানে হল ‘151 এর মধ্যে সম্ভাবনা 1’ বা বেশী, উদাহরণস্বরূপ 300 এর মধ্যে সম্ভাবনা 1। একটি ‘উচ্চ মাত্রার সম্ভাবনা’ হল সর্বোচ্চ 150 এর মধ্যে 1, উদাহরণস্বরূপ 100 এর মধ্যে সম্ভাবনা 1।
উদাহরণস্বরূপ 300 এর মধ্যে 1 সম্ভাবনার অর্থ বুঝতে 300 জনের মহিলা নিয়ে গঠিত একটি দলের কথা চিন্তা করুন। এসব গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে একজন মহিলার বাচ্চার এই সমস্যাটি থাকবে।
7. পরীক্ষা না করানো
যদি আপনি ডাউন’স সিন্ড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম ও পাটাউ’স সিন্ড্রোমের জন্য স্ক্রিনিং পরীক্ষাটি না করানোর বিকল্প বেছে নেন তাহলে এর ফলে আপনার বাকি জন্মপূর্ব দেখাশোনা প্রভাবিত হবে না।
আপনার গর্ভাবস্থার সময় যেকোনো স্ক্যানে শিশুর শারীরিক সমস্যাগুলো ধরা পড়তে পারে যেগুলো হয়তো এই রোগগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। যদি স্ক্যানে কোনো অপ্রত্যাশিত জিনিস ধরা পড়ে তাহলে আপনাকে অবশ্যই তার বিষয়ে অবহিত করা হবে।
8. আমার ফলাফল পাওয়া
আপনার স্ক্রিনিং পরীক্ষার ফলাফলে যদি দেখা যায় যে ঝুঁকির মাত্রা কম রয়েছে তাহলে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার 2 সপ্তাহের মধ্যেই আপনাকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
আপনার স্ক্রিনিং পরীক্ষার ফলাফলে যদি দেখা যায় যে ঝুঁকির মাত্রা বেশী রয়েছে তাহলে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনাকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। আলোচনার জন্য আপনাকে একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হবে:
- টেস্টের ফলাফল এবং এর মানে কী
- আপনার শিশুর সম্ভাব্য সমস্যা
- আপনার পছন্দ বেছে নেওয়ার সুযোগ
9. অধিকতর পরীক্ষা
যদি আপনার ফলাফলে স্বল্প মাত্রার ঝুঁকি জানা যায় তাহলে আপনাকে অধিকতর পরীক্ষার জন্য বলা হবে না।
ফলাফলে উচ্চ মাত্রার ঝুঁকি চিহ্নিত করা হলে আপনি যেসব সিদ্ধান্ত নিতে পারেন:
- আর কোন টেস্ট না করানোর
- একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করাবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে অধিকতর নির্ভুল একটি ফলাফল পেতে দ্বিতীয় একটি স্ক্রিনিং টেস্ট করানো (যেটিকে এনআইপিটি) বলা হয়
- সাথে সাথেই একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করানো
আপনার সিদ্ধান্তের মান রাখা হবে এবং পেশাগত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীরা আপনার সাহায্য করবেন। যদি আপনার সিদ্ধান্তের মান রাখা হচ্ছে না তাহলে আপনাকে সে কথা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা উচিত। সাপোর্ট গ্রুপগুলো থেকেও তথ্য লভ্য রয়েছে।
যে কোনো স্ক্রিনিং বা ডায়াগনস্টিক টেস্ট থেকে যে ফলাফলই আসুক না কেন আপনার পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে আপনি সহায়তা ও পরিচর্যা পাবেন।
10. দ্বিতীয় স্ক্রিনিং টেস্ট (এনআইপিটি)
দ্বিতীয় স্ক্রিনিং টেস্টটি হল আরেকটি রক্ত পরীক্ষা যাকে এনআইপিটি (নন-ইনভেসিভ প্রিন্যাটাল টেস্টিং) বলা হয়।
সমন্বিত ও কোয়াড্রুপল টেস্টের চেয়ে এনআইপিটি টেস্টটি অধিকতর নির্ভুল, যদিও যমজ বাচ্চা নিয়ে গর্ভবতী হলে সেক্ষেত্রে এই টেস্টটি ততটা নির্ভুল নয়। আপনার রক্তের ডিএনএ (জিনগত উপাদান) পরিমাপের মাধ্যমে এটি কাজ করে। এই ডিএনএর কিছু কিছু শিশুর শরীরের প্ল্যাসেন্টা থেকে আসবে। ক্রোমোজোম 21, 18 বা 13 থেকে যদি প্রত্যাশার চেয়ে বেশী পরিমাণ ডিএনএ পাওয়া যায় তাহলে এর অর্থ হল আপনার শিশুর ডাউন’স সিন্ড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম বা পাটাউ’স সিন্ড্রোম রয়েছে। যে কোনো স্ক্রিনিং টেস্টের মত এর মাধ্যমে সুনিশ্চিত কোনো কিছু জানা যায় না। এনআইপিটি টেস্ট আপনার শিশুর কোনো ক্ষতি করে না। অধিকাংশ মায়েরা তাদের ফলাফল 2 সপ্তাহের মধ্যে পাবেন।
অধিকাংশ লোকজনের ফলাফলে দেখা যাবে তাদের ঝুঁকির সম্ভাবনার মাত্রা কম তার মানে হল সমস্যা নিয়ে শিশুটির জন্মানোর সম্ভাবনা আপনার ক্ষেত্রে কম। আপনাকে একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করতে বলা হবে না।
আপনার এআইপিটি ফলাফলে যদি ঝুঁকির সম্ভাবনার মাত্রা বেশী থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার শিশুর সমস্যা থাকার সম্ভাবনা বেশী। এর পর আপনাকে একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট করতে বলা হবে তবে সেটি করাবেন কিনা তা আপনার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।
সামান্য সংখ্যক ক্ষেত্রে এনআইপিটি টেস্টে কোনো ফলাফল পাওয়া যাবে না। এর পর আপনি আরোও একটি এনআইপিটি টেস্ট, একটি ডায়াগনস্টিক টেস্ট বা আর কোনো টেস্ট না করানোর পছন্দ বেছে নিতে পারেন।
11. ডায়াগনস্টিক টেস্ট (সিভিএস বা অ্যামনিওসেন্টেসিস)
ডায়াগনস্টিক টেস্ট এ একটি সুনির্দিষ্ট উত্তর জানা যায়। এর মাধ্যমে আপনার শিশুটির শরীরের চারিদিকে থাকা প্ল্যাসেন্টা বা ফ্লুয়িড থেকে নেওয়া কোষের পরীক্ষা করা হয়।
ডায়াগনস্টিক টেস্টটি ডাউন’স সিন্ড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম বা পাটাউ’স সিন্ড্রোম এর বাইরের সমস্যাও চিহ্নিত করতে পারে তবে তার সম্ভাবনা বিরল। এই ডায়াগনস্টিক টেস্টটি করানোর ফলে 200 জন মহিলার মধ্যে 1 জনের (0.5%) অকাল গর্ভপাত হবে। 2 ধরণের ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা রয়েছে: কোরিওনিক ভিউলুস স্যাম্পলিং (সিভিএস) এবং অ্যামনিওসেন্টেসিস
11.1 সিভিএস (কোরিওনিক ভিউলুস স্যাম্পলিং)
এটি সাধারণত গর্ভধারণের 11 থেকে 14 সপ্তাহের মধ্যে করা হয় তবে এর পরেও করা যায়। সাধারণত সূক্ষ্ম একটি সূচ মায়ের পেটের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করিয়ে প্লাসেন্টা থেকে অতি ক্ষুদ্র একটি টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
অ্যামনিয়োসেন্টিসিস
এটি সাধারণত গর্ভধারণের 15 সপ্তাহ পরে করা হয়। সূক্ষ্ম একটি সূচ মায়ের পেটের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করিয়ে মায়ের জরায়ু থেকে শিশুটিকে ঘিরে থাকা তরলের সামান্য একটু নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
12. ডায়াগনস্টিক টেস্ট থেকে প্রাপ্ত ফলাফল
ডায়াগনস্টিক টেস্টটি করানোর পর কিছু মহিলারা জানতে পারবেন যে তাদের শিশু ডাউন’স সিন্ড্রোম, এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম বা পাটাউ’স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। এর পর তারা তাদের গর্ভধারণ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বা সেটি না করে অকাল গর্ভপাত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
আপনার ক্ষেত্রে এধরণের বিকল্প বেছে নেবার পরিস্থিতি আসলে আপনাকে এই রোগগুলোর বিষয়ে অধিকতর তথ্য দেওয়া হবে এবং পেশাদার স্বাস্থ্য কর্মীরা আপনাকে একটি সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবেন।
সাপোর্ট গ্রুপগুলো থেকেও তথ্য লভ্য রয়েছে।
[সাপোর্ট গ্রুপের বিষয়ে অধিকতর তথ্য এবং বিস্তারিত তথ্য] পাবেন(https://www.nhs.uk/conditions/pregnancy-and-baby/screening-amniocentesis-downs-syndrome/) এনএইচএস ওয়েবসাইটে।
13. এই প্রচারপত্রের বিষয়ে
উক্ত ছবি ব্যবহার করার জন্য আমরা ডাউন’স’স সিন্ড্রোম অ্যাসোসিয়েশনকে কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
*{সিভিএস}: কোরিওনিক ভিলাস স্যাম্পলিং *{টি21}: ট্রাইসমি 21 (ডাউন’স সিন্ড্রোম) *টি18: ট্রাইসমি 18 (এডওয়ার্ড’স সিন্ড্রোম) *{টি13}: ট্রাইসমি 13 (পাটাউ’স সিন্ড্রোম) *[এনআইপিটি]: নন-ইনভেসিভ প্রিন্যাটাল টেস্টিং